সর্বশেষ

10/সর্বশেষ/ticker-posts

বাংলাদেশেই বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তর করতে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস।

২০১১ সালে যখন বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোলিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন, তখন নতুন প্রেসিডেন্টের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় উঠে আসে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নাম। তখনকার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতা নেয়ার পর প্রথমেই যে কাজটি করবেন তা হচ্ছে বিশ্বব্যাংককে ঢাকায় স্থানান্তর। ঢাকায় স্থানান্তরের যে কারন তিনি দেখিয়েছিলেন তা অবাক করেছিলো পুরো বিশ্বকে। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে কখনোই আর আগ্রহ প্রকাশ করেননি প্রেসিডেন্ট পদ নেয়ার। কেন এতবড় সুযোগ হাতছাড়া করলেন বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা?

 


 বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে, যা মূলত সদস্য দেশগুলোর সম্মতির ওপর নির্ভরশীল। তবে সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত প্রার্থীই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, কারণ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার। ২০১১ সালে বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোলিক ঘোষণা দেন যে তিনি আরেক দফা দায়িত্ব পালন করবেন না। ফলে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আলোচনা শুরু হয়, এবং নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের নাম উঠে আসতে থাকে। সে তালিকায় শুরুর দিকেই ছিলো ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নাম। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনা হয়েছিল। বিশেষ করে, 'দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস' এবং 'দ্য গার্ডিয়ান' পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেসময় এক মার্কিন সাংবাদিক সরাসরি প্রশ্ন তুলেছিলেন যে বিশ্বব্যাংক সামলানোর মত যোগ্যতা কি ইউনুসের আছে? 



সে প্রশ্নের উত্তরে প্রফেসর ইউনুস বলেছিলেন তাকে প্রেসিডেন্ট করা হলে শুরুতেই বিশ্বব্যাংক ঢাকায় নিয়ে যাবেন। কারন হিসেবে তিনি বলেছিলেন বিশ্বব্যাংকে যারা চাকুরী করে তারা ওয়াশিংটনের উন্নত জীবনযাপনেই অভ্যস্ত, যা বাংলাদেশে সম্পুর্ন অনুপস্থিত। তাদের স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপনের জন্য তারাই বাংলাদেশে গড়ে  তুলবেন ওয়াশিংটনের পরিবেশ৷ দরিদ্র মানুষের সাথে কাজ করতে যে কর্মকর্তারা আগ্রহী হবেন তাদেরকেই নেয়া হবে ঢাকায়। দরিদ্র মানুষের মাঝে কাজ না করলে কখনোই দারিদ্র্য নিরসন সম্ভব নয়, এমনটাই ছিলো তার মতবাদ। 



তবে ড. মুহাম্মদ ইউনুস কখনোই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। কারন তিনি নিজেকে একজন সামাজিক উদ্যোক্তা হিসেবে দেখেন এবং তিনি বরাবরই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পছন্দ করেছেন। বিশ্বব্যাংকের দায়িত্ব নিলে তাঁর নীতিনির্ধারণ সদস্য দেশগুলোর উপর নির্ভর করতো, যা কখনোই চাননি ড. মুহাম্মদ ইউনুস। এছাড়া তিনি বরাবরই ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার প্রসারে নিবেদিত ছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নিলে তার এই লক্ষ্য থেকে কিছুটা সরে আসতে হতো। বিশ্বব্যাংকের দায়িত্ব নিলে রাজনৈতিক বিতর্কেরও শিকার হতে পারতেন তিনি। কারন ২০১১ এর সে সময়টাতেই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে তাঁকে অপসারনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ